মাসআলামা

ফ্ল্যাশ সেল: দুবাই ফ্লাইটে ৪০% পর্যন্ত ছাড় | সীমিত সময়ের অফার! এখনই বুক করুন এবং আপনার পরবর্তী অভিযানের জন্য প্রচুর অর্থ সাশ্রয় করুন

ভ্রমণ নির্দেশিকা এবং টিপস

মরক্কোর রঙিন ছোঁয়া: অনুভব, গল্প আর আত্মার এক যাত্রা

আমি মরক্কোতে গিয়েছিলাম না কোনো কিছু খুঁজতে, বরং সেই দেশটাই যেন আমাকে খুঁজে পেয়েছিল। মসজিদের আজান, গরম পুদিনা চায়ের ধোঁয়া, আর সেই পুরনো সরু গলিগুলো — সব যেন আমার ভেতরের কিছু জাগিয়ে তুলেছিল।

আমি যখন মারাকেশ পৌঁছালাম, সূর্য তখন ডুবে যাচ্ছে। শহরটা যেন আগুনের মতো জ্বলছিল — কিন্তু সেটা নরম, সোনালী আলোয়। জেমা এল ফনা চত্বরে জীবন ছিল থিয়েটারের মতো: সাপুড়েরা বাঁশি বাজাচ্ছে, বয়স্ক লোকেরা প্রাচীন ওষুধ বিক্রি করছে, আর ভাজা মাংসের গন্ধে চারদিক ভরে গেছে।

মারাকেশে গলি ধরে হাঁটা মানে শুধু পথ চলা না — ওটা একটা অনুভব। তুমি হারিয়ে যাবে বাজারের ভেতর, আবার নিজেকে খুঁজে পাবে কোনো শান্ত উঠোনে, যেখানে এক বৃদ্ধা বসে হাতের কাজ করছেন, বা ছোট এক ছেলেটা রং মিশিয়ে কাপড় রাঙাচ্ছে।

তিনি আমাকে বললেন, “রঙেরও সময় লাগে — তবেই সেটা সত্যি হয়।”

মরক্কোর সংস্কৃতি এক অসাধারণ মিশ্রণ — আরব, বার্বার, আন্দালুসীয়, আর ফরাসি। সব কিছুতেই একটা দারুণ ছন্দ, আর সহজ সৌন্দর্য। শেফচাওয়েন নামের নীল শহরে গিয়ে মনে হয়েছিল, আমি যেন কোনো স্বপ্নে হাঁটছি। সব কিছুই নীল — দেয়াল, দরজা, এমনকি বাতাসটাও!

ফেজ শহরে, এক নামাজপড়ুয়া মানুষ আমাকে তার বাড়িতে দাওয়াত দিলেন। তিনি কুসকুস, গরুর মাংস আর মিষ্টি পুদিনা চা দিয়ে আপ্যায়ন করলেন। বললেন, “চায়ে চিনি না থাকলে হাসি কোথা থেকে আসবে?”

সাহারা মরুভূমি ছিল আমার যাত্রার শ্রেষ্ঠ অভিজ্ঞতা। আমি উটের পিঠে বসে যখন লাল রঙের বালির ঢেউয়ের ভেতর দিয়ে যাচ্ছিলাম, মনে হচ্ছিল আমি সময়ের বাইরের কোথাও চলছি। রাতের আকাশে তারাগুলো এত উজ্জ্বল ছিল, আমি শ্বাস আটকে তাকিয়ে ছিলাম দীর্ঘক্ষণ।

মরক্কোতে ভ্রমণ মানে শুধু দেখা না, বরং বোঝা — ঐতিহ্যকে, আতিথেয়তাকে, সময়কে। এখানে প্রতিটা খাবার, প্রতিটা কার্পেট, প্রতিটা কথা — একটা গল্প। একটা জীবনযাপন।

আমি কোনো ম্যাগনেট বা চামড়ার ব্যাগ কিনে ফিরিনি। আমি নিয়ে এসেছি আজানের সুর, মরুভূমির নীরবতা, আর বাজারের উন্মাদনা। মরক্কো শুধু ভ্রমণ নয় — ওটা ছিল আমার জীবনের একটা অধ্যায়।